আমাদের সম্পর্কে

আমিনুল হক

বাংলাদেশের কিংবদন্তি গোলরক্ষক

ব্যক্তিগত তথ্য

মোহাম্মদ আমিনুল হক

জন্ম তারিখ

৫ অক্টোবর ১৯৮০ (বয়স ৪৫)

জন্মস্থান

ভোলা, বাংলাদেশ

অবস্থান

গোলরক্ষক

উচ্চতা

১.৮৫ মিটার (৬ ফুট ১ ইঞ্চি)

আমিনুল হক

জীবনী

আমিনুল হক (জন্ম ৫ অক্টোবর ১৯৮০) একজন প্রাক্তন বাংলাদেশী পেশাদার ফুটবলার যিনি গোলরক্ষক হিসেবে খেলেছেন। তাকে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ফুটবলার হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং "বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বকারী সর্বশ্রেষ্ঠ গোলরক্ষক" হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ জাতীয় দলের প্রাক্তন কোচ গিওর্গি কোটানের মতে, আমিনুল তার দেখা সেরা গোলরক্ষকদের একজন। আমিনুলের অবস্থানগত বোধ এবং খেলা বোঝার ক্ষমতা তাকে দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা গোলরক্ষক করে তুলেছে।

ইএসপিএন স্টারের শেবি সিং পরামর্শ দিয়েছিলেন যে আমিনুল সঠিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ইংল্যান্ডেও আরও ভালো লীগে খেলার যোগ্য। আমিনুল এমএসপিসিসি সিটি ক্লাবের একজন খেলোয়াড় এবং ১৯৯৪ সালে মোহামেডান এসসি-র হয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন লীগে তার ক্যারিয়ার শুরু করেন।

ক্যারিয়ার পরিসংখ্যান

৫৬
আন্তর্জাতিক ম্যাচ
১৫+
ক্লাব শিরোপা
২০
ক্যারিয়ার বছর
৫+
বিশেষ সম্মাননা

ক্যারিয়ার ও সম্মাননা

একজন কিংবদন্তি খেলোয়াড়ের যাত্রা

১৯৯৪–১৯৯৫ক্লাব

মোহামেডান এসসি

ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন লীগে ক্যারিয়ার শুরু

১৯৯৭–১৯৯৮ক্লাব

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ

প্রথম লীগ শিরোপা এবং মোহননগরী কাপ জয়

১৯৯৯-২০০০ক্লাব

ঢাকা আবাহনী

ফেডারেশন কাপ এবং জাতীয় লীগ শিরোপা

২০০৩সম্মাননা

SAFF চ্যাম্পিয়নশিপ বিজয়

টুর্নামেন্টের সেরা গোলরক্ষক - বাংলাদেশের প্রথম SAFF চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা

২০০৮-২০১০ক্লাব

মোহামেডান এসসি

২০০৯ সুপার কাপ জয় এবং সেরা গোলরক্ষক পুরষ্কার

২০১০সম্মাননা

দক্ষিণ এশীয় গেমস স্বর্ণপদক

অধিনায়ক হিসেবে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ দলকে স্বর্ণপদক জেতানোর নেতৃত্ব

২০১১–২০১২ক্লাব

শেখ জামাল ডিসি

প্রিমিয়ার লীগ এবং ফেডারেশন কাপ শিরোপা

২০০৩-২০১২পুরস্কার

ফেডারেশন কাপ চ্যাম্পিয়ন

৫ বার ফেডারেশন কাপ জয় - বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে অসাধারণ পারফরম্যান্স

আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার

১৯৯৮ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব

আমিনুল ১৯৯৮ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তিনি প্রায় ৫৬ বার ক্যাপিং করেছিলেন, যার মধ্যে তিনি ২০০৬, ২০০৮, ২০০৯ এবং ২০১০ সালে তার দেশের অধিনায়কত্ব করেছিলেন।

২০০৩ সালের SAFF চ্যাম্পিয়নশিপ: পেনাল্টি শুটআউটের সময়, তিনি আশরাফ লুথফির একটি গুরুত্বপূর্ণ শট রক্ষা করেন, যার ফলে বাংলাদেশ তাদের প্রথম SAFF চ্যাম্পিয়নশিপ জিততে পারে। আমিনুলকে টুর্নামেন্টের সেরা গোলরক্ষকও মনোনীত করা হয়।

২০১০ সালের দক্ষিণ এশীয় গেমস: তিনি বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ দলকে স্বর্ণপদক জেতানোর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তার পারফরম্যান্স নিউক্যাসল ইউনাইটেড এবং আল হিলাল এসএফসির মতো ক্লাবগুলির কাছ থেকেও আগ্রহ আকর্ষণ করেছিল।

জীবনের প্রথমার্ধ

ভোলায় জন্মগ্রহণকারী আমিনুল তার শৈশবের বেশিরভাগ সময় ঢাকায় কাটিয়েছেন, মোহাম্মদ এমরান এবং মনওয়ারা বেগমের ছেলে। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার ছোট। তার ভাই মইনুল হক, যিনি তার চেয়ে দশ বছরের বড়, তিনিও ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ফুটবল লীগে খেলেছেন।

চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ার সময়, আমিনুল কোচ ইমতিয়াজের অধীনে এমএসপিসিসি সিটি ক্লাবে প্রশিক্ষণ শুরু করেন। মিরপুরের আলুবদী গ্রামে একটি স্থানীয় টুর্নামেন্টে সিটি ক্লাবের জুনিয়র দলের হয়ে খেলার সময়, আমিনুল তার পারফর্মেন্সের জন্য ১৫০ টাকা পেয়েছিলেন।

১৯৯৩ সালে, তিনি সিটি ক্লাবের সাথে পাইওনিয়ার ফুটবল লীগে অংশগ্রহণ করেন এবং লীগের প্রথম পর্বে টানা নয়টি ক্লিনশিট ধরে রাখতে সক্ষম হন।

রাজনৈতিক জীবন

জনসেবায় নতুন অধ্যায়

ফুটবল ক্যারিয়ার শেষে আমিনুল হক রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রবেশ করেন এবং জনগণের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেন।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)

আমিনুল হক বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ঢাকা উত্তর সিটি ইউনিটের সদস্য সচিব হিসেবে যোগদান করেছেন এবং দলের হয়ে কাজ করছেন।

রাজনৈতিক সংগ্রাম:

২০০৯-২০২৪ সালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে, দুটি পৃথক নাশকতার ঘটনার কারণে তাকে ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। কয়েক মাস কারাভোগের পর পরে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

রাজনৈতিক জীবনেও আমিনুল হক তার ফুটবল ক্যারিয়ারের মতোই সাহসী এবং দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তিনি জনগণের অধিকার এবং গণতন্ত্রের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।